Dear visitor, welcome to my nabapharmacy health related personal blog. Take the medicine with the advice of a registered doctor - thank you.

হৃদরোগের জানা-অজানা কথা | Known-unknown heart diseases. - Naba Pharmacy.

Header Ads

হৃদরোগের জানা-অজানা কথা | Known-unknown heart diseases.

                                                                                     

হৃদরোগের জানা-অজানা কথা    |   Known-unknown heart diseases.

হূদরোগ হূৎপিন্ড রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় পাম্প মেশিন হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন উৎস থেকে হূদরোগের উদ্ভব ঘটে। এর মধ্যে কতগুলি জন্মকালীন ত্রুটি। হূৎপিন্ডের সচরাচর গঠনগত অস্বাভাবিকতা ত্রুটিগুলির অন্তর্ভুক্ত। কতকগুলি হূদরোগ সংক্রামক ব্যাধির সঙ্গে যুক্ত, যেমন অস্থিসন্ধি জ্বর, যার কারণ ব্যাকটেরিয়া। শারীরবৃত্তীয় অসুস্থতার মধ্যে রক্তচাপ ও হূৎপিন্ডের পাম্পিং প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা অন্তর্ভুক্ত। কোলেস্টেরল ও চর্বি জমে ধমনি সরু হয়ে যাওয়া বা ধমনিতে অন্য পদার্থ (plaque) জমা খুব বেশি দেখা যায়। ফলে ধমনিতে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। 

 

সাম্প্রতিককালের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, সাধারণ হূদরোগগুলির সঙ্গে একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কিত। উন্নয়নশীল দেশসমূহের রোগচিত্র থেকে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগের প্রাথমিক বৃদ্ধির কারণ সংক্রামক রোগ ও অপুষ্টি। ক্রমপরিবর্তিত উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থায় রোগচিত্র বদলে যায়, স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধানের উন্নতি ঘটে এবং রোগচিকিৎসা ও রোগনিয়ন্ত্রণ সম্ভব হওয়ায় সংক্রামক রোগের পরিমাণ কমে যায়। অথচ শহুরে জীবনের জটিলতা থেকে উদ্ভূত মানসিক পীড়ন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি কারণে রোগ বাড়ছে। হূদরোগ শেষোক্ত ক্যাটাগরির তথাকথিত পরিবর্তিত রোগসমূহের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের মহানগর ও শহরে বর্তমানে নির্দিষ্টভাবে উচ্চ-মধ্যবিত্তদের মধ্যে পরিবর্তনজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। 

 

জন্মগত হূদরোগ, উচ্চরক্তচাপগ্রস্ত হূদরোগ, রক্তাভাবগ্রস্ত হূদরোগ (ischaemic heart disease), মিট্রাল স্টেনোসিস (mitral stenosis) এবং বাতজনিত হূদরোগ বাংলাদেশে সচরাচর দেখা যায়। বাংলাদেশের জনসাধারণের বিভিন্ন ধরনের হূৎপিন্ডজনিত অসুস্থতার নির্ভরশীল পরিসংখ্যান নেই। তাৎক্ষণিক জরিপের মাধ্যমে এবং হাসপাতাল সূত্রে সংগৃহীত প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণা বা রেকর্ডের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, শতকরা ২.৯২ ভাগ মানুষ কোন না কোন ধরনের হূদরোগে ভুগছে। উচ্চরক্তচাপের রোগীর সংখ্যা শতকরা ১.১ ভাগ। জনসাধারণের মধ্যে বাতজনিত, রক্তাভাবগ্রস্ত ও হূদগত লয়হীন (cardiac arrhythmia) হূদরোগীর সংখ্যা যথাক্রমে শতকরা ০.৭৫, ০.৩৩ ও ০.২২ ভাগ। শতকরা ০.১৮ ভাগ মানুষে বংশগত হূদরোগ দেখা গেছে এবং শতকরা ০.২৫ ভাগ মানুষ হূদপেশি আপজাত্য (cardiomyopathy) রোগে ভুগছে। দরিদ্র তরুণ বয়স্কদের মধ্যে বাতজনিত হূদরোগ বেশি দেখা যায়। অন্যদিকে, ধনী মানুষেরা ভোগে ইসকিমিক হূদরোগে, যদিও গরীবদের মধ্যেও এ রোগ বিরল নয়। 

 

সচরাচর পারিবারিক চিকিৎসক উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসা করেন এবং নিয়মিত ঔষধ সেবন করানোর ব্যবস্থা দেন। অপেক্ষাকৃত ছোট শহরে ও গ্রামাঞ্চলে ঔষধের সাহায্যে চিকিৎসার যোগ্য উচ্চরক্তচাপের প্রাদুর্ভাবের যথার্থ উপাত্ত নেই, কিন্তু গ্রামে উচ্চরক্তচাপের রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে শহর থেকে কম। অবরুদ্ধ ধমনির চিকিৎসায় সচরাচর বাইপাস সার্জারি (by-pass-surgery) করা হয়। এক্ষেত্রে অবরুদ্ধ ধমনি কেটে ফেলে পা থেকে শিরার একাংশ উপড়ে নিয়ে অপসারিত ধমনির জায়গায় জুড়ে দেওয়া হয়। অথবা বেলুন অ্যাঞ্জিওপ­াস্টি (balloon angioplasty) করা হয়। এক্ষেত্রে ধমনিতে বেলুন ঢুকানো হয় এবং চাপ প্রয়োগ করে বেলুনকে যুগপৎ ফুলিয়ে চুপসিয়ে ধমনির প­াক সরানো হয়। সম্প্রতি কয়েকটি হাসপাতালে এই ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। 

 

 আরও দেখুন-



 

জন্মজাত হূদরোগ (congenital heart disease)  জন্ম থেকে হূৎপিন্ডের অস্বাভাবিকতা বা ত্রুটি। আনুমানিক শতকরা ১ ভাগ শিশু এই ত্রুটি নিয়ে জন্মায়। যদি চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে এক বছর বয়সকালের মধ্যে হূৎপিন্ডে এই ধরনের ত্রুটিযুক্ত প্রায় অর্ধেক শিশু মারা যায়। জন্মের এক বছরের মধ্যে বা জীবনের যেকোন পর্যায়ে রোগটি ধরা পড়তে পারে। হূৎপিন্ডের ত্রুটি, যেমন প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত অলিন্দ পর্দার ত্রুটি (atrial septal defect/ASD) বিষয়ক কোন লক্ষণ ধরা পড়ে না, আবার কখনও আকস্মিকভাবে প্রথমবারের মতো ধরা পড়তেও পারে।  বেশি দেখা যায় এমন জন্মজাত হূদরোগ হলো অলিন্দ পর্দার ত্রুটি, নিলয় পর্দার ত্রুটি (VSD), পারসিসটেন্ট ডাক্টাস আর্টেরিওসাস (PDA), মহাধমনির সঞ্চাপন (coarctation of the aorta), ফুসফুস সংবৃতি, মহাধমনি সংবৃতি, বড় ধমনিসমূহের বিন্যাসে পরিবর্তন (transposition of great arteries) ইত্যাদি। শিশুদেহে কখনও কখনও কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না বা কখনও কখনও শিশুর শ্বসন বন্ধ থাকতে দেখা যায় এবং শিশুদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশ স্থগিত থাকে। আঙ্গিক ত্রুটির সঙ্গে রোগের উপসর্গ ভিন্ন রকমের হয়। cyanotic heart disease-এ ত্বক নীল হয়ে যায় (cyanosis) ও রোগীর আঙুল স্ফীত (clubbing) হয়। মারাত্মক এ হূদরোগে মস্তিষ্ক রক্তসংবহণে অসুবিধা, মস্তিষ্কে ফোড়া ও হূদমূর্ছা (syncope) দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে সার্বিকভাবে নিলয় পর্দার ত্রুটি, অলিন্দ পর্দার ত্রুটি ও পারসিসটেন্ট ডাক্টাস আর্টেরিওসাস যথাক্রমে শতকরা ২৫-৩০, ১৫-২০ ও ১০ ভাগ মানুষের মধ্যে দেখা যায়।

 

উচ্চরক্তচাপজনিত হূদরোগ (hypertensive heart disease) গোটা মানবসভ্যতা গুরুত্বপূর্ণ এই একটিমাত্র রোগে অধিক ভুগছে। হূৎপিন্ড ও রক্তসঞ্চালন সংক্রান্ত সমস্যাসমূহের মধ্যে উচ্চরক্তচাপজনিত হূদরোগের আধিক্য বেশি এবং এটি মানুষের মৃত্যু ও অসুস্থতার বড় কারণ। উচ্চরক্তচাপ হূদবেষ্ট ধমনি রোগের (coronary artery disease) জন্য গুরুত্বপূর্ণ  ঝুঁকির বিষয় এবং এটি হূদপেশীয় ইসকিমিয়া (myocardial ischaemia), হূদপেশীয় কলাবিনষ্টি (myocardial infarction) ও হঠাৎ মৃত্যু ঘটায়। দেখা গেছে যে, উচ্চরক্তচাপের রোগীতে সুষম রক্তচাপবিশিষ্ট মানুষের চেয়ে দ্বিগুণ হূদরোগ সৃষ্টির   ঝুঁকি থাকে। 

 

উচ্চরক্তচাপ হূদবেষ্ট ধমনিতে সংকীর্ণতা সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করে, সেসঙ্গে হূৎপিন্ডের কর্মভার বৃদ্ধি করে। ফলে এদের মধ্যে হূদপেশীর কোষ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। উচ্চরক্তচাপ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সকল মৃত্যুর শতকরা ২০-২২ ভাগের জন্য দায়ী এবং এটি myocardial infarction-এর সবচেয়ে বড় কারণ।

বাংলাদেশে উচ্চরক্তচাপজনিত হূদরোগ এক বড় স্বাস্থ্যসমস্যা এবং এটি মৃত্যু ও অসুস্থতার অন্যতম বড় কারণ। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানসিক চাপ বা যন্ত্রণাক্লিষ্ট শিক্ষিত কর্মজীবী মানুষের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। অবশ্য, এদেশের অনেক উচ্চরক্তচাপের রোগীর রোগ শনাক্ত হয় না এবং তাদের চিকিৎসাও হয় না।

 

ইসকিমিক হূদরোগ (ischaemic heart disease)  এটি করোনারি ধমনি রোগ (CAD) বা করোনারি হূদরোগ (CHD) হিসেবে পরিচিত। অনুবর্তী পরিবর্তিত হূদক্রিয়াসহ হূৎপিন্ডে অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিলে এই রোগ হয়। রোগের লক্ষণ সব ক্ষেত্রে তেমন প্রকাশ পায় না, এটি হতে পারে উপসর্গহীন অথবা স্থায়ী অ্যাঞ্জাইনা পেক্টোরিস (angina pectoris), অস্থায়ী অ্যাঞ্জাইনা, তীব্র হূদপেশীয় কলাবিনষ্টি, হূৎপিন্ড নিষ্ক্রিয়করণ, হূদগত লয়হীনতা সৃজন এবং এটি অকস্মাৎ মৃত্যুও ঘটাতে পারে। এ হূদরোগ নানা কারণে হতে পারে এবং পুরুষে বহুদৃষ্ট। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগের অধিক প্রাদুর্ভাব ঘটে এবং মুত্যুর সংখ্যাও বাড়ে। এটি পৃথিবী জুড়ে মৃত্যুর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

 

মিট্রাল স্টেনোসিস (mitral stenosis)  হূৎপিন্ডের কপাটিকা সরু হয়ে যাওয়ায় অলিন্দ থেকে নিলয়ে রক্তের মুক্ত প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়া। কপাটিকা সংক্রান্ত হূদরোগে মিট্রাল স্টেনোসিস একটি বহুদৃষ্ট ব্যাধি। প্রায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি বাতজ্বরের পরিণতি হিসেবে দেখা দেয় এবং কালেভদ্রে জন্মজাত রোগের উৎস থেকে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর মিট্রাল কপাটিকার বহির্মুখ, ক্রমবর্ধমান তন্তু উৎপাদন ও মিট্রাল কপাটিকার কাপসমূহ অঙ্গাংশসমূহের একীভবনের ফলে ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে যায়। কপাটিকার আদি স্বাভাবিক বহির্মুখের আয়তন প্রায় ৪-৫ সেমি২ এবং মারাত্মক আয়তন সংকুচিত হয়ে ১ সেমি২ বা এরও কমে দাঁড়ায়। বহির্মুখ সংকুচিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বাম অলিন্দ থেকে বাম নিলয়ে রক্তপ্রবাহ সীমিত হয়ে পড়ে। বাম অলিন্দে চাপ বাড়ার ফলে ফুসফুস-শিরায় রক্তচাপ ও ফুসফুস-শিরাজট বৃদ্ধি পায়। মহিলাদের মধ্যে মিট্রাল স্টেনোসিস বেশি দেখা যায়। কপাটিকার সংকোচন মোটামুটি মারাত্মক না হওয়া পর্যন্ত রোগী প্রায় উপসর্গ মুক্ত থাকে।

 

পরিশ্রমে শ্বসন-কৃচ্ছতা, শয়নে শ্বাসকষ্ট বা রাতে শ্বাসকষ্টের প্রকোপ ইত্যাদি এই রোগের উপসর্গ। ফুসফুসীয় রক্তাধিক্যের কারণে কাশি দেখা দিতে পারে। যদি ফুসফুস, শিরা ও এর কৈশিক নালিতে রক্তচাপ দ্রুত বাড়ে তাহলে তীব্র ফুসফুস-শোথ সৃষ্টি হতে পারে। রক্তকাশও (hemoptysis) দেখা দিতে পারে। অতি পুরানো রোগের ক্ষেত্রে রোগীর হূৎপিন্ডের ডান দিক নিষ্ক্রিয় হওয়ার লক্ষণ সৃষ্টি হতে পারে। অলিন্দের ক্রমপ্রসারমাণতার কারণে অলিন্দে পেশিকম্পন সৃষ্টি হতে পারে। নাড়ির গতি স্বাভাবিক থাকতে পারে। 

 

বিশেষ করে অলিন্দে পেশিকম্পনযুক্ত দ্বিচূড় কপাটিকা   সংবৃতির রোগীতে বাম অলিন্দে রক্ত জমাট বাঁধা এবং সিস্টেমিক তঞ্চাভিবাসন দেখা দেওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। দ্বিমাত্রিক ও ডপলার ইকোকার্ডিওগ্র্যাফি দ্বারা নির্দিষ্টভাবে দ্বিচূড় কপাটিকা সংবৃতি সম্পর্কে মূল্যায়ন করানো যায়। ইসিজি (ইকোকার্ডিওগ্র্যাফি) ও বুকের এক্স-রে এই রোগ সম্পর্কে পরোক্ষ প্রমাণ তুলে ধরতে পারে। ইকোকার্ডিওগ্র্যাফির প্রচলনের আগে মারাত্মক দ্বিচূড় কপাটিকা সংবৃতি সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়ার জন্য রক্তসংবহনতন্ত্রে নালিকায়নের (cardiac catherisation) ব্যবস্থা গৃহীত হতো। দ্বিচূড় কপাটিকা     প্রসেক (mitral regurgitation) ও হূদবেষ্ট ধমনি রোগের সহাবস্থান যাচাইয়ে রক্তসংবহনতন্ত্রে নালিকায়নের ভূমিকা এখনও বিদ্যমান। 

 

মূত্রবর্ধক ঔষধ (diuretic), ডাইগোক্সিন (digoxin) ও প্রতিরোধী অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধের সাহায্যে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করা যায়, তবে এ রোগের নিশ্চিত আরোগ্যকর চিকিৎসা হলো মিট্রাল কপাটিকাছেদন (valvotomy) বা বেলুনের সাহায্যে কপাটিকা পুনর্নির্মাণ (balloon valvoplasty) বা কপাটিকা প্রতিস্থাপন (valve replacement)। বাংলাদেশে এটি এক বহুদৃষ্ট রোগ। 

 

মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (myocardial infarction)  হূৎপিন্ডের কোন অংশে রক্ত সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ বা ব্যাহত হওয়ার কারণে সৃষ্ট জটিল অবস্থা। বাংলাদেশে মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ও রোগটির প্রাদুর্ভাব বিষয়ক কোন সঠিক উপাত্ত নেই। ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত প্রতি হাজারে এ ধরনের হূদরোগীর (অ্যাঞ্জিনা পেক্টোরিস বা হূদশূল, অস্থায়ী হূদশূল, মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন এর অন্তর্ভুক্ত) সংখ্যা ছিল ৩ জন। ১৯৮৫ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় রক্তাভাবগ্রস্ত রোগীর সংখ্যা হাজারে ১৬ জন। এক সূত্রে শহরাঞ্চলে রক্তাভাবগ্রস্ত হূদরোগীর সংখ্যা হাজারে প্রায় ১০০ জন বলে জানা যায়। বাংলাদেশে মানুষের মৃত্যুর কারণসমূহের মধ্যে মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন অন্যতম প্রধান। 

 

তীব্র মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন আক্রান্ত সব রোগীকে হাসপাতালে, সম্ভব হলে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (CCU) ভর্তি করা উচিত। জরুরি ব্যবস্থার মধ্যে বিছানায় বিশ্রাম, প্রাথমিক মূল্যায়ন, শ্বসনে অক্সিজেন গ্রহণ, অন্তঃশিরা Access ও অ্যাসপিরিন বা ব্যথানাশক ঔষধ ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত। গ্রহণযোগ্য অন্যান্য ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে নিয়মিতভাবে পূর্বে প্রদত্ত পরামর্শ মেনে চলা, চিকিৎসার জন্য দ্রুত নিয়ে যাওয়া, ঝুঁকির ফ্যাক্টরে পরিবর্তন সাধন ও beta-blocker-এর মতো ঔষধ রোগীকে হাসপাতাল থেকে না ছাড়া পর্যন্ত সেবন করিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

 

অস্থিবাতগ্রস্ত হূদরোগ (rheumatic heart disease) বারবার অস্থিসন্ধি বাতগ্রস্ত হূদপ্রদাহ দ্বারা সৃষ্ট হূৎপিন্ডের একটি ক্ষতিকর অবস্থা। ক্ষতিটা মূলত ব্যাপকভাবে হূৎপিন্ডের কপাটিকার কাঠামোয় সীমাবদ্ধ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে হূদপেশীরও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। 

 

অস্থিসন্ধি জ্বরে ভোগা দুই-তৃতীয়াংশেরও অধিক রোগীতে শেষাবধি স্থায়ী অস্থিসন্ধি বাতগ্রস্ত কপাটিকা রোগের বিকাশ ঘটে। শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে দ্বিচূড় কপাটিকাই অধিক আক্রান্ত হয়। ত্রিচূড় কপাটিকা (tricuspid valve) ও ফুসফুসীয় কপাটিকা সচরাচর কম আক্রান্ত হয়। পাশ্চাত্যে অস্থিসন্ধি জ্বরের আক্রমণের ১০-২০ বছরের মধ্যে কপাটিকায় ক্ষত দেখা দিতে থাকে, কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে আরও অনেক আগে ক্ষত দেখা দেয়। 

 

ক্ষতিগ্রস্ত কপাটিকা সংকুচিত হয়ে স্বাভাবিক আকারের এক-চতুর্থাংশে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত কপাটিকার সংবৃতি সচরাচর জটিল আকার ধারণ করে না। তীব্র অস্থিসন্ধি জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সময় থেকে কপাটিকার প্রসেক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এর উপসর্গ হিসেবে আত্মপ্রকাশে সম্ভবত বিলম্ব ঘটতে পারে। কাজেই দ্বিচূড় কপাটিকা ও মহাধমনির প্রসেকের লক্ষণ শৈশবে বা প্রাপ্তবয়সের সূচনায় থাকতে পারে, কিন্তু জীবনের তিন বা চার দশক বয়সকালের আগে এসবের উপসর্গ প্রকাশ পায় না। 

 

প্রথমদিকে এসকল রোগের উপসর্গ হলো শ্রমজনিত শ্বসন-কৃচ্ছ্রতা, পরবর্তীকালে বিশ্রাম, কাশ, হূদকম্পন ও আঙ্গিক হূদমর্মরেও তা দেখা দেয়। কখনও ক্ষতিগ্রস্ত বাম বা ডান হূৎপিন্ড নিষ্ক্রিয় হতে পারে। 

 

দ্বিমাত্রিক ও ডপলার ইকোকার্ডিওগ্র্যাফি পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে কপাটিকার ক্ষতি শনাক্ত করা যায়। ইকোকার্ডিওগ্র্যাফি এবং বুকের এক্স-রে-তেও তা শনাক্ত করা যেতে পারে।   

সূত্র: banglapedia.org

পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘Facebook Page”  লাইক দিয়ে রাখুন

 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে

শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.