অ্যালার্জি থেকে মুক্তির উপায় | Ways to get rid of allergies.
অ্যালার্জি দেহের অতিসংবেদনশীল অবস্থা, সচরাচর এতে শ্বাসকষ্ট, ত্বকে ফুস্কুরি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রধান অ্যালার্জি উৎপাদক উপাদানসমূহের (অ্যালার্জেন, অ্যান্টিজেন) মধ্যে রয়েছে ঘরের ধুলাবালি, ফুলের রেণু, নানা খাদ্যবস্ত্ত ও বিভিন্ন উৎস থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া।
জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে কমপক্ষে শতকরা ১০ ভাগ মানুষ সাময়িকভাবে অস্থায়ী, তীব্র, অথবা দীর্ঘস্থায়ী অ্যালার্জিতে ভোগে। বংশগতি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে ধারণা। ধুলা বা ফুলের রেণু-সৃষ্ট গলা ও নাকের রোগ (hay fever), অস্থানিক হাঁপানি (atopic asthma), সংস্পর্শক ত্বকপ্রদাহ (contact dermatitis) ইত্যাদি ধরনের অ্যালার্জি-বৈকল্য বেশ কিছু লোকের মধ্যে দেখা যায়। বাংলাদেশে ফুলের রেণু, মাইট, ছত্রাক, ঝুরঝুরে মাটি, ঝাড় দেওয়া ঘরের ধুলাবালি কর্তৃক বহুদৃষ্ট অ্যালার্জি হলো হাঁচি, নাক থেকে পানি নিঃসরণ এবং হে ফিভারে চোখ লাল হওয়া ও চোখ থেকে পানি পড়া। খাবারের মধ্যে দুধ, ডিম, চিংড়ি, ইলিশ মাছ, গরুর মাংস ইত্যাদি অনেক সময় অ্যালার্জিজাতীয় প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে। খাদ্য সংরক্ষণকারী রাসায়নিক দ্রব্যাদি এবং রং কখনও কখনও সমস্যা সৃষ্টি করে। খাদ্যবস্ত্ততে অ্যালার্জি রোগীর বমিভাব, বমি, তলপেট ব্যথা বা উদরাময় দেখা দেয়। এর সঙ্গে ঠোঁট ফুলে যাওয়া এবং মুখে ও গলায় শিহরণ দেখা দিতে পারে। অন্যান্য রোগীতে অতিসংবেদ্যতা, হাঁপানি, নাক দিয়ে পানি নিঃসরণ, আমবাত, একজিমা ও সন্ধি প্রদাহসহ ভিন্ন ধরনের উপসর্গ থাকতে পারে। খাদ্যবস্ত্তর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার বহুবিধ কারণের মধ্যে রয়েছে বিষ বা ব্যাকটেরিয়াজনিত বিষক্রিয়া, রাসায়নিক রঞ্জকপদার্থ, মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া ও স্বাভাবিক আন্ত্রিক রোগসমূহ। খাদ্যবস্ত্ততে অ্যালার্জি রোগীদের চিকিৎসার বড় উপায় হলো তাদের খাদ্য তালিকা থেকে অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী খাদ্য বাদ দেওয়া।
আরও দেখুন-
অস্থানিক ত্বক প্রদাহ (অস্থানিক একজিমা) ত্বকের চুলকানিযুক্ত একটি বহুদৃষ্ট রোগ। এটি সচরাচর শিশুকালে দেখা দেয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়ে বিভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় প্রকাশ পায়। অধিকাংশ রোগীতে অ্যালার্জেন ত্বকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে। প্রায়ই হাঁপানি বা হে ফিভারের মতো অন্যান্য রোগের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এর প্রাদুর্ভাব ঘটে। শতকরা ০.৫-৫ ভাগ মানুষ মৌমাছির হুল দংশনের পর এক ধরনের শারীরিক প্রতিক্রিয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তবে কীটপতঙ্গের অ্যালার্জিতে মৃত্যুর ঘটনা খুবই কম। অতিসংবেদ্যতা এক ধরনের মারাত্মক রকমের অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া। আমবাত অনেক সময় শ্বসননালিতে প্রতিবন্ধকতা ও রক্তসংবহনতন্ত্রে বিপর্যয় সৃষ্টি করে। এসবের উলেখযোগ্য কারণ হলো কিছু অ্যান্টিবায়োটিক (পেনিসিলিন) ইনজেকশন, মৌমাছির হুল দংশন, খাদ্যবস্ত্ত ইত্যাদি। অবশ্য দেহের অভ্যন্তরে প্রবিষ্ট যেকোন বাহ্যিক উপাদান অতিসংবেদ্যতার জন্ম দিতে পারে। সতর্কতার সঙ্গে ত্বক, চোখ, কান, নাক, গলা, বুক ও তলপেট পরীক্ষা করলে অ্যালার্জি-বৈকল্যের কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। কেবলমাত্র অ্যালার্জির কারণকে এড়ানোর মাধ্যমে বহুলাংশে এর চিকিৎসা সম্পন্ন করা হয়। অ্যালার্জি চিকিৎসায় সচরাচর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হিস্টাসিন বিরোধী ঔষধই ব্যবহূত হয়। রোগ প্রতিষেধনের উদ্দেশ্যে ব্যবহূত মাস্ট কোষ (mast cell) সুস্থিতকারী ঔষধ কাজে লাগে। মারাত্মক অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ায় হরমোনের সাহায্যে চিকিৎসা করা হয়।
পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘Facebook Page” লাইক দিয়ে রাখুন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
No comments